Ads Area

শের শাহ সুরির ইতিহাস | History of Sher Shah Suri

শের শাহ সুরির ইতিহাস | History of Sher Shah Suri

History of Sher Shah Suri
History of Sher Shah Suri

❑ শেরশাহের প্রকৃত নাম ছিল ফরিদ খাঁ।

❑ তার পিতা হাসান খাঁ বিহারের সাসারামের জায়গীরদার ছিলেন।

❑ ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে বিহারের সুলতান বাহার খাঁ লোহানীর মৃত্যু হলে শেরশাহ 'নায়েব' হিসাবে দায়িত্ব পান।

❑ ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শেরশাহ চুনার দুর্গের অধিপতি হন। পরবর্তী সময়ে সম্রাট হুমায়ুন চুনার দুর্গ অবরোধ করেন এবং শেরশাহ তার বশ্যতা স্বীকার করেছিলেন।

❑ ১৫৩৩ খ্রিষ্টাব্দে শেরশাহ বাংলার সুলতান গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ শাহ কে পরাজিত করেন।

❑ বাংলা ও বিহার জয় - ১৫৩৪ খ্রিস্টাব্দে বিহার ও বাংলার যৌথ বাহিনীকে সুরজগড়ের যুদ্ধে পরাজিত করে শেরশাহ বিহার দখল করেন।

❑ ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে শেরশাহ গৌড় দখল করেন, দ্বিতীয়বার মাহমুদ শাহকে পরাস্ত করে।

❑ ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে রোটাস দূর্গ অধিকার করেন।

❑ চৌসার যুদ্ধ - ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে বক্সারের নিকট 'চৌসা' নামক স্থানে শের খাঁ ও হুমায়ুনের মধ্যে যুদ্ধ হয় এবং এই যুদ্ধে হুমায়ুন পরাজিত হন। কোন ক্রমে তিনি আগ্রায় পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেন। এই জয়ের ফলে বাংলা বিহার ও জৌনপুর শের খাঁর অধীনে আসে।

❑ চৌসার যুদ্ধের পর শের খাঁ 'শাহ' উপাধি নেন।

❑ কনৌজের যুদ্ধ - হুমায়ুন পুনরায় শক্তি সংগ্রহ করে পরের বছর ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে কনৌজের যুদ্ধ শেরশাহের সম্মুখীন হন। এই যুদ্ধে হুমায়ুন চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন এবং সিংহাসন ছেড়ে পারস্যে পালিয়ে যান। শেরশাহ দিল্লি ও আগ্রা দখল করেন।

❑ ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে শেরশাহ দিল্লি, আগ্রা দখল করার পর ওই বছর লাহোরও দখল করেন।

❑ তিনি ১৫৪১ খ্রিস্টাব্দে বাংলার শাসক খিজির খাঁর বিদ্রোহ দমন করেন।

❑ তিনি ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে মালব, করনমল দুর্গ ও রনথম্বোর জয় করেন।

❑ তিনি ১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দে চান্দেরি দুর্গ ও রায়সিন দখল করেন।

❑ ১৫৪৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি সামমেল এর যুদ্ধে মাড়োয়াররাজ মলদেব রাঠোরকে পরাজিত করেন এবং মেবার, আজমির ও যোধপুর জয়লাভ করেন।

❑ ২২শে মে ১৫৫৪ খ্রিস্টাব্দে বুন্দেলখন্ড কালিঞ্জর দুর্গ অবরোধকালে বিস্ফোরণে শেরশাহের মৃত্যু ঘটে।

❑ শেরশাহ পাঞ্জাব, সিন্ধু, মুলতান, মালব, গোয়ালিয়র রনথম্বোর ও মাড়োয়ার দখল করে আজমীর থেকে আবু পাহাড় পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।

❑ শেরশাহ সমগ্র সাম্রাজ্যকে ৪৭টি সরকারে বিভক্ত করেন।

❑ প্রতিটি সরকারকে অনেকগুলি 'পরগণা'য় বিভক্ত করেন এবং প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর ছিল গ্রাম।

❑ শেরশাহের শাসন ব্যবস্থার প্রকৃতি ছিল প্রজাতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার।

❑ ব্রম্ভজিৎ গৌড় ছিলেন শেরশাহের প্রধান হিন্দু সেনাপতি।

❑ শেরশাহ সুন্নি মুসলমান ছিলেন। তিনি জিজিয়া কর চালু রেখেছিলেন। 



❖ শেরশাহের শাসন ব্যবস্থা


✿ কেন্দ্রীয় শাসন -

১) দেওয়ান-ই-উজিরাত (অর্থ ও রাজস্ব)

২) দেওয়ান-ই-আর্জ (প্রতিরক্ষা)

৩) দেওয়ান-ই-রিসালত (স্বরাষ্ট্র ও বিদেশ)

৪) দেওয়ান-ই-ইনসা (সরকারের নথিপত্র)

৫) দেওয়ান-ই-কাজি (প্রধান বিচারপতি)

৬) দেওয়ান-ই-বারিক (গুপ্তচর প্রধান)

৭) দেওয়ান-ই-সামান (রাজ পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক)


✿ প্রদেশ (রাজ্য স্তর) -

১) শিকদার-ই-শিকদারান (আইনশৃঙ্খলা)

২) মুনসিফ-ই-মুসিফান (দেওয়ানি)


✿ পরগণা (জেলা স্তর) -

১) শিকদার (প্রশাসন)

২) মুনসিফ (রাজস্ব)

৩) আমিন (জমিজরিপ)

৪) কানুনগো (রাজস্ব হিসাবরক্ষক)

৫) কারকুন (করণিক)

৬) পাটোয়ারী চৌধুরী


✿ গ্রাম -

১) মুকাদ্দম



❖ দাগ ও হুলিয়া প্রথা

সেনাবাহিনীতে দেড় লক্ষ্য অশ্বারোহী বাহিনী, ২৫ হাজার পদাতিক বাহিনী এবং বিশাল সংখ্যক গোলন্দাজ বাহিনী ছিল। তিনি সৈন্যদের নগদ বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি সেনাবাহিনীতে 'দাগ' (অশ্ব চিহ্নিতকরণ) ও 'হুলিয়া' (সৈন্য লিপিবদ্ধকরণ) প্রথা চালু করেন। 



❖ রাজস্ব ব্যবস্থা

তিনি প্রথম জমি জরিপের ব্যবস্থা করেন। তিনি 'পাট্টা' (কৃষকদের অধিকার বিষয়ক দলিল) ও 'কবুলিয়ত' (সরকারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব দেওয়ার অঙ্গীকারপত্র) চালু করেন। এই ভূমি ব্যবস্থা 'জাবতি-ই-হরশাল' নামে পরিচিত ছিল। বিপদের সময় কৃষকদের তাকাভি ঋন দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। 



❖ মুদ্রা

শেরশাহ স্বর্ণমুদ্রা 'আশরফি', রৌপ্য মুদ্রা 'রুপি' ও তাম্র মুদ্রা 'দাম' প্রচলন করেছিলেন। 



❖ যোগাযোগ ব্যবস্থা

তিনি চারটি রাস্তা নির্মাণ করেন। যথা -

১) সিন্ধু থেকে ঢাকার সেনারগাঁও পর্যন্ত সড়ক-ই-আজম (বর্তমান নাম গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড)

২) আগ্রা থেকে বুরহানপুর

৩) আগ্রা থেকে যোধপুর

৪) লাহোর থেকে মুলতান 


❑ তিনি পথের ধারে বৃক্ষরোপণ, কৃপখনন ও সরাইখানা নির্মাণ করেন। তিনি মোট ১৭০০ টি সরাইখানা নির্মাণ করেন।

❑ তিনি ঘোড়ার পিঠে ডাক চলাচল ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। ডাক ব্যবস্থার তদারকির জন্য 'দারোগা-ই-চৌকি' নামে রাজকর্মচারী নিযুক্ত করা হয়েছিল।

❑ সরাইখানা দেখাশোনা করার জন্য 'দারোগা-ই-সরাইখানা' নামে পদস্থ কর্মচারী নিযুক্ত করা হয়েছিল।



❖ স্থাপত্য

রোটাসগড় দূর্গ, দিল্লির পুরানো কিল্লা, দিল্লির কিলা-ই-কুহু মসজিদ এবং সাসারামে শেরশাহের সমাধি তার সময়ের উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য কীর্তি। 



❖ সাহিত্য

❑ আব্বাস শেরওয়ানি শেরশাহের রাজত্বকাল নিয়ে 'তারিখ-ই-শেরশাহি' গ্রন্থ রচনা করেন।

❑ মালিক মহম্মদ জায়শী তাঁর আমলে রচনা করেন 'পদ্মাবতী কাব্য'।

❑ ফৈজি সিরহিন্দ এর 'তারিখ-ই-হুমায়ুন শাহি' গ্রন্থ এবং নিজামউল্লাহ'র 'মাখজাম-ই-আফগান' গ্রন্থ হল তৎকালীন সাহিত্য যার থেকে শেরশাহের রাজত্বকাল সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়।

❑ শেরশাহের পরে আরও ছয়জন শাসক দিল্লিতে রাজত্ব করেন। তাদের মধ্যে ইসলাম শাহ, ফিরোজ শাহ এবং মহম্মদ আদিল শাহ উল্লেখযোগ্য।

❑ মহম্মদ আদিল শাহ ছিলেন শূর বংশের শেষ শাসক।



গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-উত্তর:


1. শেরশাহ কোন বংশের প্রতিষ্ঠা করেন?


A) মুঘল বংশ

B) লোদী বংশ

C) শূর বংশ

D) খিলজী বংশ


উত্তরঃ- C) শূর বংশ


2. শেরশাহের আসল নাম কি ছিল?


A) বৈরাম খাঁ

B) নাসিরুদ্দিন শাহ

C) ফরিদ খাঁ

D) হাসান খাঁ


উত্তরঃ- C) ফরিদ খাঁ


3. শেরশাহের পিতার নাম কি ছিল?


A) হাসান খাঁ

B) ইব্রাহিম খাঁ

C) জালাল উদ্দিন খাঁ

D) নাসির শাহ


উত্তরঃ- A) হাসান খাঁ


4. শেরশাহের পৈতৃক জায়গীর কোথায় ছিল?


A) আজমীরে

B) দিল্লিতে

C) কানপুরে

D) বিহারের সাসারামে


উত্তরঃ- D) বিহারের সাসারামে


5. শেরশাহ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?


A) 1472

B) 1473

C) 1479

D) 1476


উত্তরঃ- A) 1472


6. শেরশাহ কোন সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন?


A) আফগান

B) মঙ্গোল

C) তুর্কি

D) কোনোটিই নয়


উত্তরঃ- A) আফগান


7. কোন যুদ্ধে শেরশাহ বিহারে নিজের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন?


A) সুরজগড়ের যুদ্ধ

B) চৌসার যুদ্ধ

C) কনৌজের যুদ্ধ

D) কোনোটিই নয়


উত্তরঃ- A) সুরজগড়ের যুদ্ধ


8. সুরজগড়ের যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়?


A) শের খাঁ ও মামুদ শাহ

B) শেরশাহ ও হুমায়ুন

C) শেরশাহ ও আকবর

D) আকবর ও প্রতাপ সিংহ


উত্তরঃ- A) শের খাঁ ও মামুদ শাহ


9. কত সালে শেরশাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন?


A) 1536

B) 1540

C) 1564

D) 1578


উত্তরঃ- B) 1540


10. কোন যুদ্ধে জয়লাভের পর শেরশাহ দিল্লির সিংহাসনে বসেন?


A) কনৌজের যুদ্ধ

B) চৌসার যুদ্ধ

C) সুরজগড়ের যুদ্ধ

D) কোনোটিই নয়


উত্তরঃ- A) কনৌজের যুদ্ধ


11. ব্রম্ভজিৎ গৌড় কে ছিলেন?


A) শেরশাহের হিন্দু সেনাপতি

B) গৌড়ের রাজা

C) একজন জায়গীরদার

D) কোনোটিই নয়


উত্তরঃ- A) শেরশাহের হিন্দু সেনাপতি


12. ঘোড়ার পিঠে ডাকব্যবস্থা কে চালু করেন?


A) হুমায়ুন

B) আকবর

C) শেরশাহ

D) কেউই নন


উত্তরঃ- C) শেরশাহ


13. কাবুলিয়ত ও পাট্টা কে প্রচলন করেন?


A) আলাউদ্দিন খিলজী

B) হুমায়ুন

C) বাবর

D) শেরশাহ শূরি


উত্তরঃ- D) শেরশাহ শূরি


14. কোথায় শেরশাহের মৃত্যু ঘটে?


A) রোটাসগড়ের দূর্গে

B) কালিঞ্জর দুর্গে

C) চিতোর দুর্গে

D) চম্পানির দুর্গে


উত্তরঃ- B) কালিঞ্জর দুর্গে


15. কে 'গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড' নির্মাণ করেন?


A) শেরশাহ

B) গিয়াসউদ্দিন বলবন

C) বাবর

D) আলাউদ্দিন খিলজী


উত্তরঃ- A) শেরশাহ


16. কাকে 'আকবরের পথপ্রদর্শক' বলা হয়ে থাকে?


A) হুমায়ুনকে

B) শেরশাহ সুরিকে

C) বৈরাম খাঁ কে

D) আলাউদ্দিন খিলজীকে


উত্তরঃ- B) শেরশাহ সুরিকে


17. শেরশাহের প্রচলন করা স্বর্ণ মুদ্রার নাম কি ছিল?


A) রুপি

B) দাম

C) আশরফি

D) কোনটিই নয়


উত্তরঃ- C) আশরফি





More Important GK Link
সাধারণ বিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর Click Here


Post a Comment

1 Comments

Please do not enter any spam link in the comment box.

Top Post Ad

Bottom Post Ad