ভারতীয় সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য - Main Salient Features of Indian Constitution
![]() |
Salient Features of Indian Constitution |
Main salient features of the Indian Constitution
✤ বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান-
✸ ভারতীয় সংবিধান বিস্তারিতভাবে লিখিত। অন্যান্য দেশের লিখিত সংবিধানের তুলনায় এই সংবিধান আয়তনে বড় এবং বিষয়বহুল।
✸ ভারতীয় সংবিধান প্রবর্তিত হওয়ার সময় এতে ৩৯৫টি ধারা (Article), বহু উপধারা (Clauses) এবং ৪টি তপশিল (Schedule) ছিল।
✸ পরবর্তীকালে বহু ভার সংবিধান সংশোধন হওয়ার জন্য এর ধারা, তালিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
✸ সংশোধিত সংবিধানে বর্তমানে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফশিল রয়েছে, যেগুলি ২৫টি অধ্যায় বিন্যস্ত।
✸ তবে এখনও ভারতীয় সংবিধানের সর্বশেষ ধারা ৩৯৫।
✤ লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের সংমিশ্রণ-
✸ ভারতের সংবিধান বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। তা সত্ত্বেও এই সংবিধান সর্বাংশে লিখিত নয়।
✸ ভারতের সংবিধানেও কিছু লিখিত অংশ আছে, যেমন- এই সংবিধানে বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যথা- বৃটেনের সংসদীয় শাসনব্যবস্থার রীতি অনুসারে লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ, দেশের শাসন ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর প্রাধান্য, সংসদীয় সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতি গ্রহণ করা হয়েছে।
✸ আন্তঃরাজ্য সহযোগিতা রাজ্যপাল মনোনয়ন, রাজ্যপালদের সম্মেলন, মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলন প্রভৃতি সম্পর্কিত ব্যবস্থা দিয়েও ভারতীয় সংবিধানের উল্লেখযোগ্য ও লিখিত অংশ।
✤ ভারতীয় সংবিধান অংশত সুপরিবর্তনীয় এবং অংশত দুষ্পরিবর্তনীয়-
✸ ভারতীয় সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরূপে সংরক্ষণের জন্য সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় বিষয়গুলির পরিবর্তন পদ্ধতি জটিল। যেমন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বন্টন, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রভৃতি বিষয়ে সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়। এই সমস্ত বিষয়ে সম্পর্কিত সংশোধনী প্রস্তাব সংসদের উভয় কক্ষের মোট সদস্যের অধিকাংশ এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যের দুই তৃতীয়াংশের দ্বারা সমর্থিত এবং অঙ্গরাজ্যগুলির আইনসভার অন্তত অর্ধেকের দ্বারা অনুমোদিত হওয়া আবশ্যক।
✸ আবার কতকগুলি ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনের জন্য তেমন কোনো জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় না। যেমন মৌলিক অধিকার, নির্দেশমূলক নীতি প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কিত সংশোধনী প্রস্তাব সংসদের উভয় কক্ষের মোট সদস্যের দুই তৃতীয়াংশের দ্বারা সমর্থিত হওয়া দরকার।
✸ তাছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতিতেই সংবিধান সংশোধন করা যায়। কোনো রাজ্যের সীমানা বা নাম পরিবর্তন, নতুন রাজ্য সৃষ্টি প্রভৃতি বিষয়, সম্পর্কিত বিল, সংসদের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে পাস হয় এবং পরিবর্তন কার্যকর হয়।
✸ এই কারণে ভারতীয় সংবিধান অংসত সুপরিবর্তনীয় কিন্তু বৃহত্তর অংশে দুষ্পরিবর্তনীয়।
✤ সংবিধানের প্রাধান্য-
✸ ভারতে সংবিধানের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভারতের সংবিধান হল দেশের মৌলিক ও সর্বোচ্চ আইন।
✸ সংবিধান আইন বিভাগ-আইন বিভাগ ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে।
✸ সরকার সংবিধান বিরোধী আইন প্রণয়ন করলে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দিতে পারে।
✤ সংবিধানের একটি প্রস্তাবনা আছে-
✸ প্রস্তাবনা হল ভারতীয় সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
✸ এতে সংবিধানের উৎস, আইনগত ভিত্তি, নৈতিক আদর্শ ও মূল লক্ষ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত উল্লেখ থাকে। এই প্রস্তাবনা থেকেই সংবিধান রচয়িতাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়।
✸ প্রস্তাবনায় ভারতকে 'সার্বভৌম', 'সমাজতান্ত্রিক', 'ধর্মনিরপেক্ষ', 'গণতান্ত্রিক', 'সাধারণতন্ত্র' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া সংবিধানের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য হিসেবে ন্যায়, স্বাধীনতা, সাম্য ও সৌভ্রাতৃত্ব, ব্যক্তি মর্যাদা, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির কথা বলা হয়েছে।
✸ ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে 'সমাজতান্ত্রিক', 'ধর্মনিরপেক্ষ' এবং 'সংহতি'- এই তিনটি শব্দ প্রস্তাবনায় যুক্ত করা হয়েছে।
✸ মার্কিন সংবিধানের প্রস্তাবনার অনুকরণে এর সৃষ্টি।
![]() |
ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা |
✤ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা-
✸ ভারতের শাসনব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রীয়, সংবিধানের কোথাও কিন্তু ভারতকে 'যুক্তরাষ্ট্র' বলে অভিহিত করা হয়নি।
✸ ২৪টি অঙ্গরাজ্যের সমন্বয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠিত। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য অনুসারে এখানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বন্টিত হয়েছে।
✸ কেন্দ্রীয় তালিকা, রাজ্য তালিকা এবং যুগ্ম তালিকা- এই তিনটি তালিকার মাধ্যমে এখানে ক্ষমতা বন্টন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত বিষয়গুলির উপর কেন্দ্রীয় সরকারের রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়গুলির উপর রাজ্য সরকারের এবং যুগ্ম তালিকাভূক্ত বিষয়গুলি উপর উভয় সরকারের যুগ্ম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
✸ যুগ্ম তালিকার অন্তর্ভুক্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের আইনই প্রাধান্য পায়। আবার নির্দিষ্ট কতগুলি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইনসভা রাজ্য তালিকাভুক্তি বিষয়েও হস্তক্ষেপ করতে পারে। তাছাড়া এই তিনটি তালিকা বহির্ভূত সকল অবশিষ্ট ক্ষমতা (Residuary Power) কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া জরুরি অবস্থার সময় ভারতীয় শাসনব্যবস্থার কাঠামো সম্পূর্ণ এককেন্দ্রিক রূপে ধারণ করে।
✸ ভারতের সংবিধানে প্রকৃতপক্ষে কেন্দ্রকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
✤ সংসদীয় শাসনব্যবস্থা-
✸ গ্রেট ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থার অনুকরণে ভারতেও পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
✸ পার্লামেন্টারি বা সংসদীয় শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য অনুসারে ভারতের শাসনতান্ত্রিক প্রধান হিসেবে আছেন একজন রাষ্ট্রপতি। তিনি হলেন 'নিয়মতান্ত্রিক' প্রধান। তার হাতে প্রকৃত ক্ষমতা নেই।
✸ দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন একটি মন্ত্রিপরিষদ। পার্লামেন্টারি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে মন্ত্রীপরিষদ গঠিত হয়।
✸ এই মন্ত্রিপরিষদকে শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার কাছে যৌথভাবে দায়িত্বশীল থাকতে হয়। লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থা হারালে মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হয়। এই যৌথ দায়িত্বশীলতার জন্যই ভারতের শাসন ব্যবস্থা কে দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা বলা হয়।
✸ ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় ক্ষেত্রেই সংসদীয় বা দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে।
(ads1)
✤ মৌলিক অধিকার-
✸ ভারতীয় মূল সংবিধানে ৭টি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করা হয়েছে।
✸ সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে ১২ থেকে ৩৫ ধারার মধ্যে ছয় শ্রেণীর মৌলিক অধিকার নাগরিকদের দেওয়া হয়েছে। যথা- (১) সাম্যের অধিকার, (২) স্বাধীনতার অধিকার, (৩) শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, (৪) ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, (৫) সংস্কৃতি ও শিক্ষা সম্পর্কিত অধিকার, (৬) শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার, (৭) সম্পত্তির অধিকার।
✤ মৌলিক কর্তব্য-
✸ ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের জন্য মোট ১১টি মৌলিক কর্তব্যের উল্লেখ আছে।
✸ কিন্তু এই কর্তব্যগুলি মান্য করার ক্ষেত্রে তেমন কোন বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হয়নি।
✤ নির্দেশমূলক নীতি-
✸ মৌলিক অধিকার ছাড়াও ভারতীয় সংবিধানে কতগুলি অধিকার অন্তর্ভুক্ত আছে।
✸ এগুলি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্দেশমূলক নীতি হিসেবে পরিচিত।
✸ ভারতীয় সংবিধানে চতুর্থ অধ্যায়ে ৩৬ থেকে ৫১ ধারার মধ্যে নীতিগুলি উল্লেখিত আছে। প্রধানত নাগরিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই হল নীতিগুলির মূল বৈশিষ্ট্য।
✸ নীতিগুলি আদালতে বলবৎ যোগ্য নয়। জনকল্যাণমূলক ভারতরাষ্ট্র গঠনের জন্য নীতিগুলি অপরিহার্য রূপে বিবেচিত হয়।
✤ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা-
✸ সংবিধান অনুসারে ভারতেও একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত আছে। এর নাম সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানের ব্যাখ্যা, মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, যুক্তরাষ্ট্রীয় বিবাদের মীমাংসা প্রভৃতি কর্তব্য সম্প্রদায়ের দায়িত্ব এই সুপ্রিমকোর্টের উপর ন্যস্ত থাকে।
✸ ভারতের বিচারবিভাগ যাতে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে নিজের দায়িত্ব সম্পাদন করতে পারে, তার জন্য সংবিধানে বিচারবিভাগীয় স্বাধীনতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
✸ বিচারপতিদের নিয়োগ, কার্যকাল, সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে সংবিধান বিচারবিভাগকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে।
✤ একনাগরিকত্ব-
✸ ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের একনাগরিকত্ব স্বীকার করা হয়েছে।
✸ ভারতের জনগণ সকলেই ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
✸ এখানে কোনো অঙ্গরাজ্যের নাগরিকত্ব স্বীকার করা হয়নি।
✤ অনুন্নত শ্রেণীর স্বার্থে বৈষম্যমূলক সংস্করণ-
✸ ভারতে অনুন্নত শ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সংবিধানে বিশেষ ব্যবস্থার উল্লেখ আছে।
✸ তফশিলভুক্ত জাতি ও তফশিলভুক্ত উপজাতিদের স্বার্থে সংবিধানে বিশেষ নির্দেশ আছে। উদাহরণ হিসেবে আইনসভায় আসন সংরক্ষণ, সরকারি চাকরিতে পদ সংরক্ষণ, শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ আর্থিক অনুকূল্য প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
✤ জরুরি অবস্থা সম্পর্কিত ব্যবস্থা-
✸ ভারতের সংবিধানে জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার সংস্থান আছে।
✸ ভারতের সংবিধানের রাষ্ট্রপতির হাতে তিন ধরনের জরুরি অবস্থাকালীন ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
✸ সংবিধানের ৩৫২ ধারা থেকে ৩৬০ ধারার মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।
✤ সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার-
✸ ভারতীয় সংবিধানের ৩২৬ ধারায় প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার স্বীকার করা হয়েছে।
✸ সংবিধান অনুসারে জাতি-ধর্ম-স্ত্রী-পুরুষ-ধনী-নিধন নির্বিশেষে ১৮ বছরের কম বয়স্ক এরকম প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে ভোটাধিকার দেওয়া হয়েছে।
✤ ভাষা সম্পর্কিত ব্যবস্থা-
✸ ভারত হল একটি বহু ভাষাভাষী দেশ। বর্তমানে ২২টি ভাষা সংবিধানের অষ্টম তপশিলের অন্তর্ভুক্ত।
✸ বিভিন্ন ভাষার অস্তিত্ব যাতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বিরোধী না হয় সে বিষয়ে সংবিধান রচয়িতারা সতর্ক ছিলেন।
✸ সংবিধানের সপ্তদশ অধ্যায়ে ৩৪৩ থেকে ৩৫১ ধারার মধ্যে ভাষা সংক্রান্ত সাংবিধানিক নির্দেশের উল্লেখ আছে।
বিভিন্ন দেশ থেকে গৃহীত ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ
❁ ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
রাষ্ট্রপতি নিয়মতান্ত্রিক প্রধান | সংবিধানের ৫৩(১) নং ধারায় প্রশাসনিক ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হলেও সংবিধানের ৭৪(১) নং ধারায় রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার পরামর্শে চলবে। ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তা বাধ্য করা হয়েছে। |
প্রধানমন্ত্রীর পদ ও তার কাজ | ৭৪(১) নং হারায় প্রধানমন্ত্রী পদ উল্লেখিত হয়েছে। ৭৫(১) নং ধারায় রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হবেন। |
মন্ত্রীদের ক্যাবিনেট ব্যবস্থা | ৪৪তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ৩৫২ নং ধারায় ক্যাবিনেট শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। ৯১তম সংশোধনের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার সর্বোচ্চ সদস্য লোকসভা ও বিধানসভার ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। |
পার্লামেন্টারি সরকার | ৭৫(৩) নং ধারা অনুযায়ী মন্ত্রিসভা যৌথভাবে লোকসভার নিকট দায়িত্বশীল থাকবে। লোকসভায় কোন একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলে সমগ্র মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করবে। |
নিম্নকক্ষের কাছে মন্ত্রিসভার যৌথ দায়িত্বশীলতা | ১৯৬৩ সালে প্রথম জে বি কৃপালিনী জওহরলাল নেহেরুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। ইন্দিরা গান্ধী সর্বাধিকবার (১৫ বার) অনাস্থা প্রস্তাব সামাল দিয়েছেন। প্রথম মোরারজী দেশাই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৪৪তম সংশোধনী অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভার পরামর্শ পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। ৭৫(৩) নং ধারা অনুযায়ী লোকসভার নিকট মন্ত্রিসভা যৌথ দায়িত্বশীল থাকবে। |
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা | ৭৯ নং ধারা অনুযায়ী লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাষ্ট্রপতিকে ভারতের পার্লামেন্ট গঠিত। ১৯১৯ সালে সর্বপ্রথম দ্বি-পরিষদ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। |
শক্তিশালী নিম্নকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা | ৭৫(৩) নং ধারা অনুযায়ী শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের (অর্থবিল, জরুরি অবস্থা) ক্ষেত্রে লোকসভা অধিক শক্তিশালী। |
এক নাগরিকত্ব | ভারতীয় সংবিধানের ২ নং পার্টে (৫-১১ নং ধারায়) নাগরিকত্ব বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। |
লোকসভার স্পিকারের কার্যাবলী | সংবিধানের ৯৩ নং ধারা অনুযায়ী লোকসভায় ১ জন স্পিকার এবং ১ জন ডেপুটি স্পিকার থাকবেন। |
❁ রাশিয়া-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
মৌলিক কর্তব্য | ৫১(এ) ধারায় ১১টি মৌলিক কর্তব্য উল্লেখিত। ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে ১০টি এবং ২০০২ সালে ৮৬তম সংবিধান সংশোধনী অনুযায়ী শিশুকে শিক্ষা দেওয়া পিতা-মাতার মৌলিক কর্তব্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। |
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | ১৯৫১ সালে শুরু হয়। পরিকল্পনা কমিশন সংবিধান বহির্ভূত সংস্থা। প্রথম সভাপতি জওহরলাল নেহেরু। সহ-সভাপতি গুলজারিলাল নন্দ। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে পরিকল্পনা কমিশনের পরিবর্তে নীতি আয়োগ হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান - অরবিন্দ পানাগারিয়া। |
❁ আয়ারল্যান্ড-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি | ৫৪ নং ধারা অনুযায়ী নির্বাচিত এমপি এবং অঙ্গরাজ্যের, দিল্লি ও পন্ডিচেরির এমএলএ-দের নিয়ে গঠিত নির্বাচক সংস্থা দ্বারা নির্বাচিত হন। ৫৫ নং ধারায় নির্বাচন পর্যায় উল্লেখিত। ৭১ নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিরোধী সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত |
রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি | সংবিধানের ৩৬-৫১ নং ধারায় ১৭টি নির্দেশমূলক নীতি রয়েছে। ৪৪ নং ধারায় ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এখনও চালু হয়নি। |
রাষ্ট্রপতি দ্বারা রাজসভায় সদস্য মনোনয়ন | ৮০ নং ধারা অনুযায়ী ১২ জন সদস্যকে কলা, শিক্ষা, সমাজসেবা থেকে রাষ্ট্রপতি রাজ্যসভায় নির্বাচিত করতে পারেন। |
❁ অস্ট্রেলিয়া-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
যুগ্ম তালিকা | ২৪৬(২) নং ধারায় যুগ্ম তালিকায় বর্তমানে ৫২টি বিষয় রয়েছে। |
প্রস্তাবনার ভাষা | |
ব্যবসা-বাণিজ্যের অধিকার | সংবিধানের ১৯ নং ধারায় ১(জি) তে নাগরিকদের যেকোনো বৃত্তি অবলম্বন করার অধিকার বর্ণিত হয়েছে। |
(ads2)
❁ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
লিখিত সংবিধানের ধারণা | ভারতীয় সংবিধানের মোট ৩৯৫টি মূল ধারা (যদি ওখানে ঠিক বিচারে মোট ধারা সংখ্যা ৪৪৮টি এবং ১২টি তফশিল নিয়ে গঠিত)। |
নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ধারণা | ভারতীয় সংবিধানে ১২-৩৫ নং ধারায় নাগরিকদের জন্য ৬টি মৌলিক অধিকার প্রদান করা হয়েছে। মূল সংবিধানে এতে ৭টি অধিকার ছিল। কিন্তু ১৯৭৮ সালে ৪৪তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ৩১ নং ধারায় সম্পত্তির অধিকার বাতিল করা হয় মোরারজী দেশাইয়ের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে। ভারতে মৌলিক অধিকারের ধরন হল পৌর ও রাজনৈতিক। ২১(এ) ধারায় শিক্ষার অধিকার যুক্ত হয়েছে ৮৬তম সংশোধনী ২০০২-এর মাধ্যমে। ভারতে বসবাসক বিদেশি নাগরিকরা কেবল ১৪ নং ধারা ও ২০-২৮ নং ধারায় মৌলিক অধিকার ভোগ করে। |
সুপ্রিম কোর্টের ধারণা | সংবিধানের ১২৪-১৪৭ নং ধারায় সুপ্রিম কোর্ট সম্পর্কে আলোকিত। প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক ৭ জন থাকলেও ২০১১ সাল থেকে আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৩১ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ৪টি এলাকার রয়েছে। (১) মূল এলাকা - (১৩১ নং ধারা) সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত কোনো মামলা এবং কেন্দ্র রাজ্য বিরোধ মামলা সরাসরি দায়ের করা যায়। (২) আপিল এলাকা - (১৩২-১৩৬ নং ধারা)। (৩) পরামর্শদান এলাকায় (১৪৩ নং ধারা) সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেয়। (৪) লেখ জারির এলাকা (৩২ নং ধারা)। |
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ধারণা | ১৭৮৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের শাসনব্যবস্থার কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রীয়। কিন্তু সংবিধানে কোথাও যুক্তরাষ্ট্র শব্দটি উল্লেখ করা হয়নি। সংবিধানের প্রথম ধারায় ভারতকে রাজ্যসমূহের ইউনিয়ন বলা হয়েছে। |
প্রস্তাবনা | প্রস্তাবনার খসড়া তৈরি করেন জওহরলাল নেহেরু। প্রস্তাব ওনায় প্রথমে ভারতকে সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্র বলা হয়। পরে ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দ দুটি যোগ করা হয়। |
রাষ্ট্রপতি সৈন্যবাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার | ৫৩ নং ধারা। তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন। যদিও তা পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন। সেনাবাহিনীর প্রধান নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। |
উপরাষ্ট্রপতি সংসদের উচ্চকক্ষের সভাপতি | সংবিধানের ৬৪ নং ধারা অনুযায়ী উপরাষ্ট্রপতি হবেন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সভাপতি। যদিও তিনি রাজ্যসভার সদস্য নন। তিনি পক্ষে-বিপক্ষে সমান ভোট পড়লে নির্ণায়ক ভোট দিতে পারেন। |
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা | ভারতীয় সংবিধানের ১৩৭ নং ধারা অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। |
সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারকদের অপসারণ পদ্ধতি | পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে মোট সদস্যের অধিকাংশ ও উপস্থিত ভোটদানকারীর দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতায় ইমপিচমেন্ট বিল পাস হলে রাষ্ট্রপতি বিচারকদের পদচ্যুত করতে পারেন। সংবিধানের ১২৪(৪) নং ধারায় ও ২১৭(বি) নং ধারায় বর্ণিত। |
❁ কানাডা-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় ধরনের সরকার (শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্র) | ডঃ আম্বেদকর, কে সি হোয়ার ভারতকে আধা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা বলেছেন। |
কেন্দ্রের অবশিষ্ট ক্ষমতার ধারণা | ২৪৮ নং ধারায় অবশিষ্ট ক্ষমতা কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে। |
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বন্টন | সংবিধানের ৭ম তফশিলে ৩টি তালিকার মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ক্ষমতা বন্টিত। |
❁ জার্মানি-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
জরুরি অবস্থার সময় মৌলিক অধিকার বাতিল করা | সংবিধানের ৩৫৮ নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ১৯ নং ধারায় অধিকার বাতিল করতে পারেন। ৩৫৯ নং ধারা অনুযায়ী এই সময় রাষ্ট্রপতি মৌলিক অধিকার গুলি স্থগিত রাখতে পারেন। |
❁ ফ্রান্স-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
'প্রজাতন্ত্র' ধারণা | প্রস্তাবনায় ভারতকে 'প্রজাতন্ত্র' বলা হয়েছে। |
স্বাধীনতা, সাম্য ও সৌভ্রাতৃত্বের ধারণা | প্রস্তাবনায় সংবিধানের উদ্দেশ্য বলা হয়েছে - ন্যায়, স্বাধীনতা, সাম্য ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা। |
❁ দক্ষিণ আফ্রিকা-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি | ভারতীয় সংবিধানে ৩৬৮ নং ধারায় উল্লেখিত। প্রথম সংশোধনী ১৯৫১ সালের মাধ্যমে নবম তফশিল যুক্ত হয়। আজ পর্যন্ত সংবিধান ১০১ বার সংশোধিত হয়েছে। সংশোধনী বিল পার্লামেন্টের যেকোনো কক্ষে উত্থাপন করা যায় এবং উভয় কক্ষেই পাস হওয়া বাধ্যতামূলক। |
রাজ্যসভায় সদস্য নির্বাচন | ৮০(৪) নং ধারা অনুযায়ী রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের দ্বারা একক হস্তান্তরযোগ্য। ভোট ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজ্যসভার সদস্যরা নির্বাচিত হন। |
❁ জাপান-
ভারতীয় সংবিধানের বিষয়সমূহ | ভারতীয় সংবিধানের সংকলিত ধারা |
---|---|
সুপ্রিম কোর্ট পরিচালনার আইন | সংবিধানের ১৪৫ নং ধারায় সুপ্রিম কোর্ট পরিচালনার রীতি বর্ণিত হয়েছে। |
আরও পড়ুন...
◼️ ভারতে কোম্পানির আমলে শাসনতান্ত্রিক ও বিচারবিভাগীয় সংস্কারসমূহ
◼️ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তালিকা - List of Presidents of the United States
Please do not enter any spam link in the comment box.