ভারতের মৃত্তিকা, শ্রেণীবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য - Soil of India, Types and Characteristics in Bengali
![]() |
ভারতের মৃত্তিকা, শ্রেণীবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য |
ভারতের মৃত্তিকা :
মাটি বা মৃত্তিকা হলো পৃথিবীর উপরিভাগের নরম আবরণ। পাথর গুঁড়ো হয়ে সৃষ্ট খনিজ পদার্থ এবং জৈব যৌগ মিশ্রিত হয়ে মাটি গঠিত হয়। জৈব পদার্থের উপস্থিতিতে ভূমিক্ষয় আবহবিকার, বিচূর্ণিভবন ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পাথর থেকে মাটির উদ্ভব হয়েছে। ভারতে প্রকৃতির বৈচিত্র্যের জন্য এখানে বিভিন্ন ধরনের মাটি দেখা যায়। উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য, উদ্ভিদ, রং ও জলবায়ুর তারতম্য অনুসারে ভারতের মাটিকে Indian Council of Agricultural Research (ICAR) আটটি প্রধান বিভাগে ভাগ করেছে।
ভারতের মৃত্তিকার শ্রেণীবিভাগ :
১) পলিমৃত্তিকা
২) কৃষ্ণমৃত্তিকা
৩) লোহিত মৃত্তিকা
৪) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা
৫) মরু মৃত্তিকা
৬) লবণাক্ত মৃত্তিকা
৭) পিট ও জলাভূমি অঞ্চলের মাটি
৮) পার্বত্য মৃত্তিকা
১) পলিমৃত্তিকা (Alluvial Soil) :
অবস্থান :
এই মাটি উত্তরের সমভূমি, শতদ্রু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি, মহানদী-গোদাবরী-কৃষ্ণা-কাবেরী নদীর উপত্যকা ও ব-দ্বীপ এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব প্রভৃতি স্থানে সাধারণত এই মাটি পরিলক্ষিত হয়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ এই মাটিতে পলি, বালি ও কাদার ভাগ বেশি থাকে।
◾ এই মাটিতে সাধারণত পটাশ, ফসফরিক অ্যাসিড, চুন এবং জৈব পদার্থ মিশ্রিত থাকে।
◾ এই মাটি খুব উর্বর হওয়ায় কৃষিকাজে এটি খুব উপযোগী।
◾ এই মাটিতে ধান, গম, ইক্ষু, পাট, আলু প্রভৃতি উৎপন্ন হয়।
◾ এই মৃত্তিকার রং গাঢ় হয়।
আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পলিমাটিকে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে -
১) ভাঙ্গর :
➥ পুরাতন পলি মাটিকে ভাঙ্গর বলা হয়। এটি মূলত কাদামাটি নিয়ে গঠিত। এই জায়গা নদী থেকে দূরে অবস্থিত হয়।
২) খাদার :
➥ নবীন পলি মাটিকে খাদার বলা হয়। এটি গাঙ্গেয় সমভূমিতে পাওয়া যায় এবং এই মাটি খুব উর্বর হয়।
৩) ভাবর :
➥ হিমালয়ের পাদদেশে নুড়ি ও কাঁকর মিশ্রিত পলিমাটিকে ভাবর বলে। এই অঞ্চল কৃষিকাজের পক্ষে অনুপযুক্ত।
৪) তরাই :
➥ উচ্চ বৃষ্টিপাতের কারণে এই অঞ্চল জলাকীর্ণ এবং স্যাতসেতে প্রকৃতির হয়। এটি কৃষির পক্ষে উপযুক্ত। এই অঞ্চল নাইট্রোজেন এবং জৈব পদার্থ দ্বারা সমৃদ্ধ কিন্তু ফসফেটের অভাব দেখা যায়।
২) কৃষ্ণমৃত্তিকা (Black Soil) :
অবস্থান :
দাক্ষিণাত্য মালভূমির মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটকের অংশবিশেষ, অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট ও তামিলনাড়ু জুড়ে এই মৃত্তিকা দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ এই মৃত্তিকা রেগুর মৃত্তিকা বা কার্পাস মৃত্তিকা বা Black Cotton Soil নামেও পরিচিত।
◾ লাভা গঠিত ব্যাসল্ট শিলার আবহবিকারের ফলে এই মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে।
◾ এই মাটিতে টাইটানিয়াম অক্সাইড এর পরিমাণ বেশি থাকে।
◾ এই মাটিতে সাধারণত চুন, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম এবং পটাস মিশ্রিত থাকে।
◾ এই মাটি কার্পাস তুলা চাষের পক্ষে আদর্শ। এছাড়াও তামাক, গম, জোয়ার, তৈলবীজ, মিলেট প্রভৃতি চাষ হয়।
৩) লোহিত মৃত্তিকা (Red Soil) :
অবস্থান :
এই মৃত্তিকা সাধারণত সমগ্র তামিলনাড়ু, কর্নাটকের অংশবিশেষ, মহারাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের পূর্বাংশ, ছোটনাগপুর অঞ্চল, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলায় লক্ষ্য করা যায়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ এই মৃত্তিকা আর্কিয়ান, প্রিক্যাম্বিয়ান যুগের গ্রানাইট, নিস ও কোয়ার্টজাইট শিলা দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে।
◾ লোহিত মৃত্তিকায় লৌহের পরিমাণ বেশি থাকায় এই মৃত্তিকা লাল রঙের হয়।
◾ এই মৃত্তিকায় অতি অল্প পরিমাণে নাইট্রোজেন, জৈব পদার্থ এবং ফসফরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
◾ এই মৃত্তিকা অনুর্বর তবে বর্তমানে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে এই মৃত্তিকায় চিনাবাদাম, আলু, ভুট্টা, ধান, রাগি, গম, বাজরা, ডাল, আখ, তৈলবীজ এবং কমলালেবু, আম এবং শাকসবজি প্রভৃতি ফসল উৎপাদিত হয়।
৪) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা (Laterite Soil) :
অবস্থান :
সাধারণত পশ্চিমঘাট পর্বতের শীর্ষদেশে, পূর্বঘাট, রাজমহল পাহাড়, অসম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে সাধারণত এই মৃত্তিকা লক্ষ্য করা যায়।
◾ এই মৃত্তিকাতে আয়রন অক্সাইড, বিভিন্ন ধরনের জৈব পদার্থ, ফসফেট এবং ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
◾ কাঁকরে পরিপূর্ণ বলে এই মৃত্তিকার জল ধারণ ক্ষমতা খুব কম।
◾ ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা কাজুবাদাম চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এছাড়াও তুলা, চা, নারকেল ও ডাল ইত্যাদি চাষ করা হয়।
৫) মরু মৃত্তিকা (Desert Soil) :
অবস্থান :
এই মৃত্তিকা দেখা যায় প্রধানত রাজস্থানের মরুভূমি, গুজরাটের উত্তরাংশে, কচ্ছ অঞ্চলে, হরিয়ানার পশ্চিমাংশে এবং পাঞ্জাবের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে।
বৈশিষ্ট্য :
◾ এই মৃত্তিকাকে সিরোজেম মৃত্তিকা বলা হয়।
◾ এই মৃত্তিকা বাদামি হলুদ বা হালকা হলুদ বর্ণের হয়।
◾ এই মৃত্তিকা সাধারণত বালি পূর্ণ ও লবণাক্ত প্রকৃতির হয়।
◾ এই মৃত্তিকা অল্প পরিমাণে নাইট্রোজেন ও জৈব পদার্থ দিয়ে গঠিত হয়।
◾ এই মৃত্তিকা সাধারণভাবে কৃষিকাজের পক্ষে অনুপযোগী, তবে উপযুক্ত পরিমাণে জলসেচ ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করলে মিলেট, বার্লি শস্য উৎপাদন করা যায়।
৬) লবণাক্ত ও ক্ষারীয় মৃত্তিকা (Saline & Alkaline Soil) :
অবস্থান :
বিহার, উত্তর প্রদেশ হরিয়ানা, পাঞ্জাব, সুন্দরবন অঞ্চল ও কচ্ছের রণ অঞ্চলে এই মৃত্তিকা লক্ষ্য করা যায়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ এই প্রকার মৃত্তিকা বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন - রে, ঊষর, কন্নার, থুর প্রভৃতি।
◾ এই মৃত্তিকাতে সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
◾ এই মৃত্তিকা কৃষিকাজের পক্ষে অনুপযুক্ত।
৭) পিট ও জলাভূমি অঞ্চলের মাটি (Peat Soil) :
অবস্থান :
সাধারণত কেরালার উপকূলসহ, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ুর উপকূল অঞ্চলে এই মৃত্তিকা দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ অধিক বৃষ্টিপাত এবং উচ্চ আর্দ্রতা যুক্ত অঞ্চলে এই মৃত্তিকা লক্ষ্য করা যায়।
◾ এই মৃত্তিকায় জৈব পদার্থের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
◾ এই প্রকারের মৃত্তিকা সাধারণত ধান ও পাট চাষের জন্য উপযোগী।
৮) পার্বত্য মৃত্তিকা (Mountain and Forest Soil) :
অবস্থান :
এই মৃত্তিকা প্রধানত পর্বতের ঢাল যুক্ত অঞ্চলে যেখানে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় সেই অঞ্চলে লক্ষ্য করা যায়।
বৈশিষ্ট্য :
◾ এই মৃত্তিকায় জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে।
◾ এই মৃত্তিকায় পটাশ, ফসফরাস এবং চুনের পরিমাণ কম থাকে। তাই এই মৃত্তিকা অনুর্বর প্রকৃতির। তবে সার প্রয়োগে উর্বর হয়।
◾ এই মৃত্তিকা অনুর্বর হলেও চা, কফি, বিভিন্ন ঔষধিদ্রব্য, বিভিন্ন প্রকার ফল প্রভৃতির চাষ হয়।
ভারতের মৃত্তিকা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :
◾ পলিমাটি চাষের উপযোগী ও অত্যাধিক উর্বর।
◾ পলিমাটি হল নদী অববাহিকার মাটি।
◾ ভারতের সবচেয়ে বেশি অঞ্চল জুড়ে পলিমাটির অবস্থান লক্ষ্য করা যায়।
◾ কারেওয়া মাটি হলো কাশ্মীর উপত্যকার পলিমাটি।
◾ কৃষ্ণ মৃত্তিকাকে রেগুর, কার্পাস মৃত্তিকা, Black Cotton Soil বলা হয়।
◾ কৃষ্ণ মৃত্তিকায় তুলা চাষ ভালো হয়।
◾ লালমাটি গ্রানাইট থেকে সৃষ্ট, অল্প বৃষ্টি-অধিক উষ্ণতা অঞ্চলে দেখা যায়।
◾ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, বীরভূম জেলায় লোহিত মৃত্তিকা দেখা যায়।
◾ মরু মৃত্তিকা রাজস্থানে দেখা যায়।
◾ মরু মৃত্তিকাকে সিরোজেম বলে।
◾ মরুকরণ বলতে বোঝায় মরুভূমির সম্প্রসারণ ও ক্ষয় বৃদ্ধি।
◾ পডসল মৃত্তিকা হলো পার্বত্য মাটি, আম্লিক, অনুর্বর মাটি।
◾ ঝুমচাষ উত্তর-পূর্ব ভারতে পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা যায়।
◾ ধাপ চাষ মৃত্তিকা ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করে।
◾ ভূমিধস দেখা যায় পাহাড়ি ঢালে।
◾ মেঘালয় মালভূমি অঞ্চল এবং পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায়।
◾ ল্যাটেরাইট হল ইটের মতো শক্ত মাটি।
◾ ভারতের মৃত্তিকা গবেষণাগার অবস্থিত দেরাদুনে।
◾ ভারতের মরু গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত যোধপুরে।
◾ সোলাম শব্দের অর্থ মেঝে বা ভূমি।
◾ মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে পিডোজেনেসিস বলে।
◾ মৃত্তিকা সৃষ্টির পূর্ব শর্ত হলো আবহবিকার ও বিচূর্ণীভবন।
◾ রোগলিথ হলো মৃত্তিকা সৃষ্টির আগের পর্যায়।
◾ ছোটনাগপুর মালভূমি, মেঘালয় ও পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায়।
◾ কারেওয়া মাটিতে জাফরান চাষ ভালো হয়। কারেওয়া কাশ্মীর উপত্যকার পলিমাটি।
◾ ভারতের 25 শতাংশ অঞ্চল ভূমিক্ষয় প্রবণ।
◾ মৃত্তিকা ক্ষয়ের ফলে মৃত্তিকার উপরের পুষ্টি মৌলের (N, P, K, Ca, Mg) অপসারণ ঘটে ফলে উর্বরতা কমে।
ভারতের মৃত্তিকা প্রশ্ন উত্তর :
১) ভারতের মৃত্তিকার শ্রেণীবিভাগ করেছে কোন সংস্থা?
উত্তরঃ ICAR (Indian Council of Agricultural Research)
২) ভারতের সবচেয়ে বেশি অঞ্চল জুড়ে কোন মৃত্তিকা রয়েছে?
উত্তরঃ ভারতের সবচেয়ে বেশি অঞ্চল জুড়ে পলি মৃত্তিকা রয়েছে।
৩) ভারতের কৃষিতে কোন মাটির গুরুত্ব সবথেকে বেশি?
উত্তরঃ ভারতের কৃষিতে পলিমাটির গুরুত্ব সবথেকে বেশি।
৪) ভারতের সবচেয়ে উর্বর মাটি কোনটি?
উত্তরঃ ভারতের সবচেয়ে উর্বর মাটি হল নদী অববাহিকার পলিমাটি।
৫) কোন মাটিতে ধান চাষ ভালো হয়?
উত্তরঃ পলি মাটিতে ধান চাষ ভালো হয়।
৬) গুজরাটের নবীন পলিমাটিকে কি বলে?
উত্তরঃ গুজরাটের নবীন পলিমাটিকে মাটা বলে।
৭) গুজরাটের প্রাচীন পলিমাটিকে কি বলে?
উত্তরঃ গুজরাটের প্রাচীন পলিমাটিকে গোরাট বলে।
৮) পাঞ্জাব সমভূমি অঞ্চলের নবীন পলিমাটি গঠিত ভূমিকে কি বলে?
উত্তরঃ পাঞ্জাব সমভূমি অঞ্চলের নবীন পলিমাটি গঠিত ভূমিকে বেট বলে।
৯) পাঞ্জাব সমভূমি অঞ্চলের প্রাচীন পলিমাটি গঠিত ভূমিকে কি বলে?
উত্তরঃ পাঞ্জাব সমভূমি অঞ্চলের প্রাচীন পলিমাটি গঠিত ভূমিকে ধায়া বলে।
১০) গাঙ্গেয় সমভূমির নবীন পলিমাটি অঞ্চলকে কি বলে?
উত্তরঃ গাঙ্গেয় সমভূমির নবীন পলিমাটি অঞ্চলকে খাদার বলে।
১১) উচ্চগঙ্গা সমভূমির প্রাচীন পলিমাটি গঠিত অঞ্চলকে কি বলে?
উত্তরঃ উচ্চগঙ্গা সমভূমির প্রাচীন পলিমাটি গঠিত অঞ্চলকে ভাঙ্গর বলে।
১২) ভাঙ্গর অঞ্চলের দানাযুক্ত মাটিকে কি বলে?
উত্তরঃ ভাঙ্গর অঞ্চলের দানাযুক্ত মাটিকে কঙ্কর বলে।
১৩) হিমালয়ের পাদদেশে নুড়ি ও কাঁকর মিশ্রিত পলিমাটিকে কি বলে?
উত্তরঃ হিমালয়ের পাদদেশে নুড়ি ও কাঁকর মিশ্রিত পলিমাটিকে ভাবর বলে।
১৪) আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিমাংশের উর্বর পলিমাটিকে কি বলে?
উত্তরঃ আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিমাংশের উর্বর পলিমাটিকে রোহি বলে।
১৫) কোন মাটিতে ভারতের খাদ্য ভান্ডার বলা হয়?
উত্তরঃ পলিমাটিকে ভারতের খাদ্য ভান্ডার বলা হয়।
১৬) কোন শিলা থেকে কৃষ্ণ মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে?
উত্তরঃ ব্যাসল্ট শিলা থেকে কৃষ্ণ মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে।
১৭) ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক মৃত্তিকা কোন মৃত্তিকা?
উত্তরঃ ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক মৃত্তিকা হল কৃষ্ণ মৃত্তিকা বা কালো মাটি।
১৮) ভারতের কোন মাটি কার্পাস চাষের জন্য উপযুক্ত?
উত্তরঃ কৃষ্ণ মৃত্তিকা বা কালো মাটি কার্পাস চাষের জন্য উপযুক্ত।
১৯) মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে কোন মাটি বেশি দেখা যায়?
উত্তরঃ মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে কালো মাটি বেশি দেখা যায়।
২০) কৃষ্ণ মৃত্তিকার স্থানীয় নাম কি?
উত্তরঃ কৃষ্ণ মৃত্তিকার স্থানীয় নাম রেগুর মৃত্তিকা।
২১) রেগুর মাটির নামকরণ কিভাবে হয়েছে?
উত্তরঃ তেলেগু শব্দ রেগুডা থেকে রেগুর মাটির নামকরণ হয়েছে।
২২) কৃষ্ণ মৃত্তিকার রং কালো হয় কেন?
উত্তরঃ কৃষ্ণ মৃত্তিকায় টাইটেনিয়াম অক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকার জন্য রং কালো হয়।
২৩) রেগুর মাটির জল ধারণ ক্ষমতা কেমন?
উত্তরঃ রেগুর মাটির জল ধারণ ক্ষমতা বেশী।
২৪) Black Cotton Soil কাকে বলে?
উত্তরঃ কৃষ্ণ মৃত্তিকা তুলা চাষের উপযোগী বলেই এটিকে Black Cotton Soil বলে।
২৫) কালো মাটি চটচটে হয় কেন?
উত্তরঃ কালো মাটিতে সূক্ষ মন্টমোরিলোনাইট কণা থাকে বলে কালো মাটি চটচটে হয়।
২৬) ডেকান ট্র্যাপ অঞ্চলে কোন মাটি দেখা যায়?
উত্তরঃ ডেকান ট্র্যাপ অঞ্চলে কৃষ্ণ মৃত্তিকা বা কালো মাটি দেখা যায়।
২৭) ভারতের কোন অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায়?
উত্তরঃ ভারতের মালভূমি অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায়।
২৮) কোন মাটির গঠন মৌচাকের মতো?
উত্তরঃ ল্যাটেরাইট মাটির গঠন মৌচাকের মতো।
২৯) কোন প্রক্রিয়ায় ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ ধৌত প্রক্রিয়ায় ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়।
৩০) Honey Comb Soil কোন মৃত্তিকাকে বলে?
উত্তরঃ Honey Comb Soil বলা হয় ল্যাটেরাইট মৃত্তিকাকে।
৩১) খোয়াই বা গালি ক্ষয় দেখা যায় কোন মৃত্তিকায়?
উত্তরঃ খোয়াই বা গালি ক্ষয় দেখা যায় ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায়।
৩২) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা কোন উপাদানের জন্য লাল হয়?
উত্তরঃ ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায় লৌহ অক্সাইড থাকার জন্য লাল হয়।
৩৩) কোন মাটির শুকিয়ে গেলে ইটের মতন শক্ত হয়?
উত্তরঃ ল্যাটেরাইট মাটি শুকিয়ে গেলে ইটের মতন শক্ত হয়।
৩৪) পশ্চিমবঙ্গে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায় কোন জেলায়?
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায় পুরুলিয়ায়।
৩৫) ল্যাটেরাইট মাটির উপরে অনেক সময় শক্ত আবরণ দেখা যায় তাকে কি বলে?
উত্তরঃ ল্যাটেরাইট মাটির উপরে অনেক সময় যে শক্ত আবরণ দেখা যায় তাকে বলে ডুরিক্রাস্ট।
৩৬) ভারতে অধিক বৃষ্টিপাত ও উষ্ণতাযুক্ত অঞ্চলে কোন মাটির সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ ভারতে অধিক বৃষ্টিপাত ও উষ্ণতাযুক্ত অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটির সৃষ্টি হয়।
৩৭) ব্যাডল্যান্ড কোন মৃত্তিকায় দেখা যায়?
উত্তরঃ ব্যাডল্যান্ড ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায় দেখা যায়।
৩৮) বদভূমি বা ব্যাডল্যান্ড ভারতে সর্বাধিক কোথায় দেখা যায়?
উত্তরঃ ব্যাডল্যান্ড ভারতে সর্বাধিক দেখা যায় চম্বল নদীর উপত্যকায় (মধ্যপ্রদেশ)।
৩৯) কোন শিলা থেকে লোহিত মাটির সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ গ্রানাইট ও নিস শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বিয়োজিত হয়ে লোহিত মাটির সৃষ্টি হয়।
৪০) লাল মাটিতে কোন খনিজ বেশি পরিমাণে থাকে?
উত্তরঃ লাল মাটিতে বেশি পরিমাণে থাকে লোহা।
৪১) লোহিত মৃত্তিকায় কোন উপাদানের জন্য এর রং লাল হয়?
উত্তরঃ লোহিত মৃত্তিকায় ফেরিক অক্সাইডের জন্য এর রং লাল হয়।
৪২) ভারতের পডসল মাটিতে কোন উদ্ভিদ জন্মায়?
উত্তরঃ ভারতের পডসল মাটিতে সরলবর্গীয় উদ্ভিদ জন্মায়।
৪৩) কোন মাটিতে হার্ডপ্যান দেখা যায়?
উত্তরঃ পডসল মাটিতে হার্ডপ্যান দেখা যায়।
৪৪) হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে কোন মাটি দেখা যায়?
উত্তরঃ হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে পডসল মাটি দেখা যায়।
৪৫) কোন মৃত্তিকায় হিউমাসের পরিমাণ বেশি?
উত্তরঃ পডসল মৃত্তিকায় হিউমাসের পরিমাণ বেশি।
৪৬) পডসল মৃত্তিকার রং কেমন?
উত্তরঃ পডসল মৃত্তিকার রং ধূসর।
৪৭) পডসল মাটি কি প্রকৃতির হয়?
উত্তরঃ পডসল মাটি আম্লিক প্রকৃতির হয়।
৪৮) কোন মৃত্তিকাকে অরণ্য মৃত্তিকা বলে?
উত্তরঃ পার্বত্য মৃত্তিকাকে অরণ্য মৃত্তিকা বলে।
৪৯) কোন মাটিতে চা চাষ ভালো হয়?
উত্তরঃ পার্বত্য মাটিতে চা চাষ ভালো হয়।
৫০) মরু অঞ্চলে কোন মাটি দেখা যায়?
উত্তরঃ মরু অঞ্চলে সিরোজেম মাটি দেখা যায়।
৫১) মরু মাটির প্রকৃতি কিরূপ?
উত্তরঃ মরু মাটির প্রকৃতি ক্ষারধর্মী।
৫২) হালকা গ্রথনযুক্ত কোন মাটি ভারতে দেখা যায়?
উত্তরঃ হালকা গ্রথনযুক্ত মরু মাটি ভারতে দেখা যায়।
৫৩) কোন মাটির জল ধারণ ক্ষমতা সবথেকে কম?
উত্তরঃ মরু মাটির জল ধারণ ক্ষমতা সবথেকে কম।
৫৪) মরু মৃত্তিকা অঞ্চলে কোন ফসল চাষ হয়?
উত্তরঃ মরু মৃত্তিকা অঞ্চলে মিলেট জাতীয় শস্য চাষ হয়।
৫৫) মরু মৃত্তিকার অপর নাম কি?
উত্তরঃ মরু মৃত্তিকার অপর নাম সিরোজেম।
৫৬) কোন মাটিতে জৈব পদার্থ খুব কম থাকে?
উত্তরঃ মরু মাটিতে জৈব পদার্থ খুব কম থাকে।
৫৭) মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রধান কারণ কি?
উত্তরঃ মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রধান কারণ হল বৃক্ষছেদন।
৫৮) মাটির উপর খড়কুটো, লতাপাতা, পুরানো কাগজ বিছিয়ে রেখে মৃত্তিকাক্ষয় রোধ করার পদ্ধতিকে কি বলে?
উত্তরঃ মাটির উপর খড়কুটো, লতাপাতা, পুরানো কাগজ বিছিয়ে রেখে মৃত্তিকাক্ষয় রোধ করার পদ্ধতিকে মালচিং পদ্ধতি বলে।
৫৯) মৃত্তিকাক্ষয় বৃদ্ধিকারী একটি কৃষি পদ্ধতি কি?
উত্তরঃ মৃত্তিকাক্ষয় বৃদ্ধিকারী একটি কৃষি পদ্ধতি হল ঝুমচাষ।
৬০) ঝুম চাষের ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় ভারতে কোথায় দেখা যায়?
উত্তরঃ অসম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে ঝুম চাষের ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় দেখা যায়।
৬১) পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিক্ষয়ের প্রধান কারণ কি?
উত্তরঃ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিক্ষয়ের প্রধান কারণ হল ভূমিধস।
৬২) অধিক ঢাল যুক্ত পার্বত্য অঞ্চলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ কিভাবে করা যায়?
উত্তরঃ অধিক ঢাল যুক্ত পার্বত্য অঞ্চলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা হয় সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ করে।
৬৩) ভারতের মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্র কোথায় আছে?
উত্তরঃ ভারতের মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্র দেরাদুনে অবস্থিত।
৬৪) ভারতের মরু মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্র কোথায় আছে?
উত্তরঃ ভারতের মরুম মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্র যোধপুরে অবস্থিত।
৬৫) কারেওয়া মৃত্তিকা কোথায় দেখা যায়?
উত্তরঃ কাশ্মীর উপত্যকায় কারেওয়া মৃত্তিকা দেখা যায়।
৬৬) কাশ্মীর উপত্যকায় কারেওয়া মাটি কোন চাষের জন্য বিখ্যাত?
উত্তরঃ কাশ্মীর উপত্যকায় কারেওয়া মাটি জাফরান চাষের জন্য বিখ্যাত।
৬৭) রে বা ঊষর বা কালার কোন মৃত্তিকাকে বলে?
উত্তরঃ রাজস্থানের শুষ্ক অঞ্চলের লবণাক্ত বা ক্ষারধর্মী মৃত্তিকাকে রে বা ঊষর বা কালার বলে।
৬৮) রণ অঞ্চল কি?
উত্তরঃ গুজরাটের উত্তরাংশের কাদাময় ভূমিকে রণ বলে।
৬৯) ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা যায়?
উত্তরঃ গুজরাটে ভারতের সর্বাধিক লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা যায়।
৭০) মাটির pH মান বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ মাটির pH মান দ্বারা মাটির প্রকৃতি নির্ণয় করা হয়। মাটির pH মান ৭ হলে মাটি প্রশমিত প্রকৃতির হয়। pH মান ৭ এর বেশি হলে মাটি ক্ষারকীয় প্রকৃতির এবং pH মান ৭ এর কম হলে মাটি আম্লিক প্রকৃতির হয়।
Read More...
◾ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সীমারেখার তালিকা
◾ ভারতের উল্লেখযোগ্য হ্রদগুলির নামের তালিকা
◾ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কেন্দ্রগুলির তালিকা
Please do not enter any spam link in the comment box.