ভারতের বিখ্যাত স্থাপত্য, প্রতিষ্ঠাতা, স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
![]() |
ভারতের বিখ্যাত স্থাপত্য, প্রতিষ্ঠাতা, স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য |
ভারতের স্থাপত্য ঐতিহ্য বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত। প্রাচীন থেকে আধুনিক, প্রতিটি স্থাপত্যকর্মের পেছনে রয়েছে ইতিহাস, ধর্ম এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন। নিচে ভারতের বিখ্যাত স্থাপত্য, তাদের প্রতিষ্ঠাতা, স্থান এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো:
✤ সুলতানি আমল ✤
✦ স্থাপত্য: কুতুবমিনার
➥ প্রতিষ্ঠাতা: কুতুবুদ্দিন আইবক
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: শেখ কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাজীর স্মৃতিতে নির্মিত। কুতুবউদ্দিন আইবক এটির নির্মাণ শুরু করেন এবং ইলতুৎমিস এটির নির্মাণ কার্য সম্পন্ন করেন।
![]() |
কুতুব মিনার |
✦ স্থাপত্য: কুয়াৎ-উল-ইসলাম
➥ প্রতিষ্ঠাতা: কুতুবুদ্দিন আইবক
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ইন্দো-ইসলামিক রীতিতে তৈরি। বহু জৈন মন্দির ও বিষ্ণুমন্দির ভেঙে নির্মিত হয় কুয়াৎ-উল-ইসলাম। স্থাপত্যটি মৌর্য যুগের একটি মন্দিরের লৌহস্তম্ভ না ভেঙে এই মসজিদের অংশ রূপে রেখে দেওয়া হয়।
![]() |
কুয়াৎ-উল-ইসলাম |
✦ স্থাপত্য: আড়াই-দিন-কা-ঝোপড়া
➥ প্রতিষ্ঠাতা: কুতুবুদ্দিন আইবক
➥ স্থান: আজমীর
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ভারতের সুলতানি স্থাপত্যের প্রথম নিদর্শন এটি। যার পাশে ছিল সরস্বতী ঠাকুরের মূর্তি বিশিষ্ট একটি মন্দির। মহম্মদ ঘোরির নির্দেশে কুতুবউদ্দিন এটিকে মসজিদের রূপ দান করেন। এটি ইন্দো-ইসলামিক রীতিতে তৈরি।
![]() |
আড়াই-দিন-কা-ঝোপড়া |
✦ স্থাপত্য: ইলতুৎমিসের সমাধি
➥ প্রতিষ্ঠাতা: ইলতুৎমিস
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ইলতুৎমিসের সমাধি নির্মিত হয়েছিল ১২৩৫ খ্রিস্টাব্দে। এটি কুয়াৎ-উল-ইসলামের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত।
![]() |
ইলতুৎমিসের সমাধি |
✦ স্থাপত্য: সুলতানগড়ি
➥ প্রতিষ্ঠাতা: ইলতুৎমিস
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: সুলতানগড়ি দিল্লিতে নির্মিত প্রথম ইসলামিক সমাধি সৌধ। এটি ১২৩১ খ্রিস্টাব্দে ইলতুৎমিসের জ্যোষ্ঠ পুত্র নাসিরুদ্দিন মাহমুদের স্মৃতিতে নির্মিত হয়।
![]() |
সুলতানগড়ি |
✦ স্থাপত্য: বলবনের সমাধি
➥ প্রতিষ্ঠাতা: গিয়াসউদ্দিন বলবন
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: বলবনের সমাধি সৌধ দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলি প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যানে অবস্থিত। এটি ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়। এই সমাধি সৌধতেই ভারতের প্রথম ইসলামিক আর্টের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
![]() |
বলবনের সমাধি |
✦ স্থাপত্য: আলাই দরওয়াজা
➥ প্রতিষ্ঠাতা: আলাউদ্দিন খলজি
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: আলাই দরওয়াজা কুতুবমিনার কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে অবস্থিত কুয়াৎ-উল-ইসলাম মসজিদের প্রবেশদ্বার। এটি নির্মাণ করেন আলাউদ্দিন খলজি ১৩১১ খ্রিস্টাব্দে। এটি লাল বেলে পাথরে নির্মিত। এতে ভারতের প্রথম গম্বুজের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
![]() |
আলাই দরওয়াজা |
(ads1)
✦ স্থাপত্য: হাউজখাস
➥ প্রতিষ্ঠাতা: আলাউদ্দিন খলজি
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: হাউজখাস কমপ্লেক্স দক্ষিণ দিল্লিতে অবস্থিত। এতে একটি জলাধার, মসজিদ, ইসলামিক সেমিনারি, সমাধি সৌধ অবস্থিত। আলাউদ্দিন খলজি এটি নির্মাণ করেন।
![]() |
হাউজখাস |
✦ স্থাপত্য: সিরিনগর
➥ প্রতিষ্ঠাতা: আলাউদ্দিন খলজি
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: সিরিনগর বা সিরি দুর্গ আলাউদ্দিন খলজির আমলে নির্মিত হয় দিল্লিকে মোঙ্গলদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য। ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে একটি নির্মিত হয়। মধ্যযুগীয় দিল্লির এটি দ্বিতীয় শহর। এই দুর্গে হাজার স্তম্ভ বিশিষ্ট 'হাজার সুতান' আরেকটি স্থাপত্য অবস্থিত।
![]() |
সিরিনগর |
✦ স্থাপত্য: তুঘলকাবাদ দুর্গ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: গিয়াসউদ্দিন তুঘলক
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: তুঘলকাবাদ দুর্গ তুঘলক বংশের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াসউদ্দিন তুঘলক ১৩২১ সালে নির্মাণ করেন। এটি মধ্যযুগীয় দিল্লির তৃতীয় শহর।
![]() |
তুঘলকাবাদ দুর্গ |
✦ স্থাপত্য: জাহানপানাহ (দুর্গবেষ্টিত শহর)
➥ প্রতিষ্ঠাতা: মহম্মদ বিন তুঘলক
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ফরাসি ভাষায় 'জাহানপানাহ' শব্দের অর্থ পৃথিবীর আশ্রয়স্থল। এটি প্রধানত আদিলাবাদ দুর্গ, কুইলা রাই পিথোরা দুর্গ ও মিরি দুর্গ ধারা বেষ্টিত। এই দুর্গ শহরের অভ্যন্তরে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থাপত্য হল বেগমপুর মসজিদ, বিজয়মন্ডল, কলসুরাই মসজিদ।
![]() |
জাহানপানাহ |
✦ স্থাপত্য: ফিরোজাবাদ প্রাসাদ দুর্গ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: ফিরোজ শাহ তুঘলক
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ফিরোজ শাহ তুঘলক ১৩৫৪ খ্রিস্টাব্দে ফিরোজাবাদ প্রাসাদ দুর্গ নির্মাণ করেন, যা ফিরোজ শাহ কোটলা নামে পরিচিত। ফিরোজ শাহ তুঘলক চোপরা জালান নামক গ্রামে প্রাপ্ত অশোকের স্তম্ভলেখকে নিয়ে এসে এই শহরে স্থাপন করেন।
![]() |
ফিরোজাবাদ প্রাসাদ দুর্গ |
✦ স্থাপত্য: মঠ কা মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: সিকান্দার লোদী
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: মঠ কা মসজিদ ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে সিকান্দার লোদীর আমলের নির্মিত হয়। ওয়াজির মিয়া ভোইয়া এটি নির্মাণ করেন। যদি মধ্যযুগীয় দিল্লির চতুর্থ শহরে অবস্থিত। এই যুগের সবথেকে সুন্দর গম্বুজ এই মসজিদে অবস্থিত।
![]() |
মঠ কা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: সিকান্দার লোদীর সমাধি
➥ প্রতিষ্ঠাতা: ইব্রাহিম লোদী
➥ স্থান: দিল্লি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: সিকান্দার লোদীর সমাধি লোদী গার্ডেনে অবস্থিত। সিকান্দার লোদীর পুত্র ইব্রাহিম লোদী এই সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন ১৫১৭-১৮ খ্রিস্টাব্দে।
![]() |
সিকান্দার লোদীর সমাধি |
✤ প্রাদেশিক স্থাপত্য ✤
✦ স্থাপত্য: আদিনা মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: সিকান্দার শাহ
➥ স্থান: পান্ডুয়া
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি পূর্বে ছিল একটি শিবমন্দির। নাম ছিল আদিনাথ মন্দির। সিকান্দার শাহের মৃত্যুর পর তাকে এখানেই সমাধিস্থ করা হয়।
![]() |
আদিনা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: ছোটো সোনা মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: হোসেন শাহ
➥ স্থান: নবাবগঞ্জ (বাংলাদেশ)
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এর ১৫টি গম্বুজ সোনা দ্বারা পরিবৃত ছিল। এর একটি অংশের দেওয়ালে কোরানের নির্দেশ খোদিত আছে।
![]() |
ছোটো সোনা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: বড় সোনা মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: নসরৎ শাহ
➥ স্থান: গৌড় (মালদা)
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এই মসজিদে প্রায় ৪৪টি অর্ধ গোলাকৃতি গম্বুজ সোনা দ্বারা আবৃত ছিল। বর্তমানে এর মধ্যে ১১টি গম্বুজ অক্ষত আছে। এটি ইন্দো-আরবীয় রীতিতে নির্মিত ও গৌড়ে অবস্থিত স্থাপত্য গুলির মধ্যে বৃহত্তম। এর নির্মাণ শুরু করেন আলাউদ্দিন হুসেন শাহ ও নির্মাণ সম্পন্ন করেন তার পুত্র নসরৎ শাহ।
![]() |
বড় সোনা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: দাখিল দরওয়াজা
➥ প্রতিষ্ঠাতা: নাসিরউদ্দিন মহম্মদ শাহ
➥ স্থান: গৌড় (মালদা)
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: দাখিল দরওয়াজা নির্মাণ করেন নাসিরউদ্দিন মহম্মদ শাহ। এটি গৌড়ের মুখ্য প্রবেশদ্বার।
![]() |
দাখিল দরওয়াজা |
✦ স্থাপত্য: একলাখী মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: জালালউদ্দিন মহম্মদ শাহ
➥ স্থান: পান্ডুয়া
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি ১৪২৫ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়। এই মসজিদ চত্বরে তিনটি সমাধি সৌধ অবস্থিত।
![]() |
একলাখী মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: অটলাদেবী মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: সুলতান ইব্রাহিম
➥ স্থান: জৌনপুর
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ১৪০৮ খ্রিস্টাব্দে ইব্রাহিম শাহ সারকি অটলাদেবী মসজিদ নির্মাণ করেন। অটলা দেবীর মন্দিরকে রূপান্তরিত করে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
![]() |
অটলাদেবী মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: জামি মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা:
➥ স্থান: জৌনপুর
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি ১৪২৪ সালে নির্মিত হয়। সেই সময়ে এটি সর্বাপেক্ষা বৃহৎ মসজিদ ছিল।
![]() |
জামি মসজিদ |
(ads2)
✦ স্থাপত্য: তিন দরওয়াজা প্রবেশদ্বার
➥ প্রতিষ্ঠাতা: আহম্মদ শাহ
➥ স্থান: আহমেদাবাদ
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: তিন দরওয়াজা প্রবেশদ্বার আহমেদাবাদের ভদ্র ফোর্টের প্রবেশদ্বার।
![]() |
তিন দরওয়াজা প্রবেশদ্বার |
✦ স্থাপত্য: নাগিনা মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: মামুদ কুখারা
➥ স্থান: আহমেদাবাদ
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: নাগিনা মসজিদ গুজরাটের চম্পারণে অবস্থিত। এটি পঞ্চদশ শতকে নির্মিত হয়।
![]() |
নাগিনা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: হিন্দোল মহল
➥ প্রতিষ্ঠাতা: হোসাং শাহ
➥ স্থান: মালব
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: মধ্যপ্রদেশের মান্ডু শহরে অবস্থিত একটি দরবার কক্ষ। এটি ১৪২৫ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়।
![]() |
হিন্দোল মহল |
✦ স্থাপত্য: মান্ডু দুর্গ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: হোসাং শাহ
➥ স্থান: মালব
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: মান্ডু দুর্গের নির্মাণ শুরু করেন হোসাং শাহ। হোসাং শাহ তার রাজধানী মান্ডুতে স্থানান্তরিত করেন। মান্ডু দুর্গে দিল্লি দরওয়াজা, হোসাং শাহের সমাধি, জাহাজ মহল, হিন্দোল মহল, রূপমতী বাবা বাহাদুরের দুর্গ অবস্থিত।
![]() |
মান্ডু দুর্গ |
✦ স্থাপত্য: হোসাং শাহর সমাধি
➥ প্রতিষ্ঠাতা:
➥ স্থান: মালব
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: হোসাং শাহের সমাধি সৌধ আফগান স্থাপত্য শৈলীর অন্যতম নিদর্শন। এটি ভারতে মার্বেল পাথরে তৈরি প্রথম স্থাপত্য সৌধ। শাহজাহান তাজমহল নির্মাণের পূর্বে তার স্থপতিদের মান্ডু পাঠিয়েছিলেন এই সমাধি সৌধ সম্পর্কে তথ্য আরোহনের জন্য।
![]() |
হোসাং শাহর সমাধি |
✦ স্থাপত্য: জাহাজ মহল
➥ প্রতিষ্ঠাতা: গিয়াসউদ্দিন খলজি
➥ স্থান: মালব
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: গিয়াসউদ্দিন খলজি পঞ্চদশ শতকে এই সৌধ নির্মাণ করেন। এটি দুটি হ্রদের মাঝখানে অবস্থিত, যথা - কাসুর তালাব এবং মুঞ্জা তালাব।
![]() |
জাহাজ মহল |
✦ স্থাপত্য: জামা মসজিদ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: প্রথম মহম্মদ শাহ
➥ স্থান: গুলবর্গা
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি ১৩৬৭ সালে বাহমনী শাসক প্রথম মহম্মদ শাহ গুলবর্গাতে (কালাবুর্গি) নির্মাণ করেন। গুলবর্গাতে রাজধানী স্থাপনকে স্মরণীয় করে রাখতে তিনি এই মসজিদ নির্মাণ করেন।
![]() |
জামা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: গোলগম্বুজ
➥ প্রতিষ্ঠাতা: মহম্মদ আদিল শাহ
➥ স্থান: বিজাপুর
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: গোলগম্বুজ আদিল শাহী বংশের আমলে নির্মিত সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য সৌধ। দাক্ষিণাত্যে নির্মিত প্রযুক্তিগতভাবে সবথেকে উন্নত গম্বুজ এই স্থাপত্যে পাওয়া যায়। মধ্য সপ্তদশ শতকে মহম্মদ আদিল শাহের শাসনকালে এই স্থাপত্যের নির্মাণ শুরু হয়।
গোলগম্বুজ |
✦ স্থাপত্য: হাজারা মন্দির
➥ প্রতিষ্ঠাতা: দ্বিতীয় দেবরায়
➥ স্থান: হাম্পি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: পঞ্চদশ শতকের শুরুতে দ্বিতীয় দেবরায়ের আমলে এই মন্দির নির্মিত হয়। পাম্পের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই মন্দিরে ভগবান রামের উপাসনা করা হয়।
![]() |
হাজারা মন্দির |
✦ স্থাপত্য: বিঠলস্বামী মন্দির
➥ প্রতিষ্ঠাতা: দ্বিতীয় দেবরায় নির্মাণ করেন। কৃষ্ণদেব রায়ের আমলে আরো বিস্তৃতি ঘটে
➥ স্থান: হাম্পি
➥ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: বিঠলস্বামী মন্দির সর্বাপেক্ষা বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য। এই মন্দিরে বিঠলের উপাসনা করা হয়, তিনি বিষ্ণুর উপাসক। এই মন্দিরটি স্তম্ভ অলংকৃত এবং পাথরের রথের জন্য বিখ্যাত।
![]() |
বিঠলস্বামী মন্দির |
✤ মুঘল যুগের স্থাপত্য ✤
✦ স্থাপত্য: কাবুলিবাগ মসজিদ
প্রতিষ্ঠাতা: বাবর
স্থান: পানিপথ
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ১৫২৭ সালে বাবর পানিপথে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। পানিপথের প্রথম যুদ্ধের জয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য। পরবর্তীকালে তোরণ এবং উদ্যান তৈরি করা হয়। মুঘলদের ভারত বিজয়ের পর নির্মিত প্রথম স্থাপত্য এটি এবং বাবরপত্নী কাবুলি বেগমের নামানুসারে এটির নামকরণ করা হয়। হুমায়ুন এই মসজিদে একটি বৃহৎ মঞ্চ নির্মাণ করেন।
![]() |
কাবুলিবাগ মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: পুরোনো কেল্লা
প্রতিষ্ঠাতা: শেরশাহ
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি হুমায়ুন নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে শেরশাহ হুমায়ুনকে পরাজিত করার পর এই দুর্গ দখল করেন এবং এই দুর্গের দেওয়ালের নির্মাণ সম্পন্ন করেন।
![]() |
পুরোনো কেল্লা |
✦ স্থাপত্য: কিলা-ই-কুহনা মসজিদ
প্রতিষ্ঠাতা: শেরশাহ
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: কিলা-ই-কুহনা মসজিদ পুরানো কেল্লার অভ্যন্তরে অবস্থিত। এটি আফগান স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত।
![]() |
কিলা-ই-কুহনা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: শেরশাহের সমাধি
প্রতিষ্ঠাতা: শেরশাহ
স্থান: সাসারাম
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: বিহারের সাসারামে নির্মিত এই স্থাপত্য সৌধটি ইন্দো-ইসলামীয় স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন। একটি বৃহৎ গম্বুজ ও দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলে নির্মিত ছত্রিগুলি এই স্থাপত্য সৌধের অন্যতম নিদর্শন।
![]() |
শেরশাহের সমাধি |
✦ স্থাপত্য: দিনপনাহ
প্রতিষ্ঠাতা: হুমায়ুন
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: হুমায়ুন নিজ সাম্রাজ্যকে রক্ষা করার জন্য এই দুর্গবেষ্টিত শহরের নির্মাণকার্য শুরু করেন। শেরশাহ দুর্গ ও বেশ কিছু স্থাপত্য নির্মাণের মাধ্যমে এই নির্মাণকার্যকে নতুন রূপে দান করেন। তিনি শহরের নতুন নাম দেন 'শেরগড়'।
![]() |
দিনপনাহ |
✦ স্থাপত্য: হুমায়ুনের সমাধি সৌধ
প্রতিষ্ঠাতা: আকবর
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ভারতীয় স্মৃতিসৌধ গুলির মধ্যে প্রথম এটিতেই বাগানের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। এটিতে লাল বেলে পাথরের আধিক্য ছিল। হুমায়ুনের মূল সৌধের নিকটে পরবর্তীকালে তার স্ত্রী হামিদা বেগম, শাহজাহানের পুত্র দারাশিকো এবং পরবর্তী মুঘল শাসক দার খাশিয়রকে সমাধিস্থ করা হয়।
![]() |
হুমায়ুনের সমাধি সৌধ |
✦ স্থাপত্য: আগ্রা দুর্গ
প্রতিষ্ঠাতা: আকবর
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি প্রকৃতপক্ষে লাল বেলে পাথরের দ্বারা নির্মিত দুর্গবেষ্টিত শহর। মধ্যযুগের শাসকদের সাম্রাজ্য শাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এর অগ্রা দুর্গ। দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হল দিল্লি গেট ও অমরসিং গেট।
![]() |
আগ্রা দুর্গ |
✦ স্থাপত্য: ফতেপুর সিক্রি
প্রতিষ্ঠাতা: আকবর
স্থান: ফতেপুর সিক্রি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: আকবরের রাজত্বকালে এটি মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। এই স্থাপত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য এখানে দুর্গের সাথে বৃহৎ প্রাসাদ অবস্থিত। ফতেপুর সিক্রির অন্যতম প্রাসাদগুলি হল- যোধাবাঈ প্যালেস, বীরবলের গৃহ, মারিয়াম প্যালেস, সেলিম চিস্তির সমাধি সৌধ, জামা মসজিদ, পঞ্চমহল, বুলন্দ দরওয়াজা ইত্যাদি অবস্থিত।
![]() |
ফতেপুর সিক্রি |
✦ স্থাপত্য: পঞ্চমহল
প্রতিষ্ঠাতা:
স্থান: ফতেপুর সিক্রি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি পাঁচ তলা মহল। এই স্থাপত্যটিতে বৌদ্ধ বিহারের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
![]() |
পঞ্চমহল |
✦ স্থাপত্য: বুলন্দ দরওয়াজা
প্রতিষ্ঠাতা: আকবর
স্থান: ফতেপুর সিক্রি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: 'বুলন্দ দরওয়াজা'-র অর্থ বিজয়ের প্রবেশদ্বার। আকবরের গুজরাট বিজয়ের স্মারকরূপে ১৫৭৩ খ্রিস্টাব্দে ১৭৬ ফুট দীর্ঘ এই স্থাপত্য নির্মিত হয়। এটি প্রধানত লাল বেলে পাথর এবং সাদা ও কালো মার্বেল পাথর দ্বারা প্রস্তুত। এর পূর্ব দিকের তোরণে ফারসি লিপিতে আকবরের উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাট বিজয়ের কাহিনী বিবৃত হয়েছে।
![]() |
বুলন্দ দরওয়াজা |
✦ স্থাপত্য: আকবরের সমাধি
প্রতিষ্ঠাতা: আকবর
স্থান: সেকেন্দ্রাবাদ
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: আকবর স্বয়ং স্মৃতিসৌধের নির্মাণ শুরু করেন। মূল সৌধটি চারটি স্তম্ভবিশিষ্ট পিরামিড দ্বারা গঠিত। এতে লাল বেলেপাথর, সাদা মার্বেল পাথর, কালো শ্লেট পাথরের আথিক্য পরিলক্ষিত হয়।
![]() |
আকবরের সমাধি |
✦ স্থাপত্য: ইতিমাদ-উদ-দৌল্লার সমাধি সৌধ
প্রতিষ্ঠাতা: নূরজাহান
স্থান: আগ্রা
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: নূরজাহান তার পিতা মির্জা গিয়াস বেগের জন্য এই সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন। এই সমাধি সৌধতে কর্নোলিয়ান, জ্যাসপার, ল্যাপিস, লাজুলি, টোপাজ-এর মতো দামি পাথর দিয়ে নানারকম অলংকরণ করা হয়েছে, যা পাইট্রাডুরা নামে পরিচিত।
![]() |
ইতিমাদ-উদ-দৌল্লার সমাধি সৌধ |
✦ স্থাপত্য: জাহাঙ্গীরের সমাধি
প্রতিষ্ঠাতা: জাহাঙ্গীর
স্থান: লাহোর
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: এটি রাভি নদীর তীরে অবস্থিত। এই স্থাপত্যে পারস্যের সাফাবিদ শৈলীর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এই স্থাপত্যেও আকবরের সমাধি সৌধের মত কেন্দ্রীয় গম্বুজের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। মূল সৌধটির ওপর ছাদের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।
![]() |
জাহাঙ্গীরের সমাধি |
✦ স্থাপত্য: তাজমহল
প্রতিষ্ঠাতা: শাহজাহান
স্থান: আগ্রা
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত তাজমহল স্থাপত্যটি শাহজাহান পত্নী আর্জুমান বাবু বেগম বা মুমতাজ মহলের স্মৃতিতে নির্মিত। এর প্রধান স্থপতি হলেন উস্তাদ আহমেদ লাহোরি। এটি সাদা মার্বেল পাথরে তৈরি ও এর অভ্যন্তরে মূল্যবান পাথর দিয়ে কারুকার্য করা আছে, যা পাইট্রাডুরা নামে পরিচিত। রাজস্থানের মারকান থেকে শ্বেত মার্বেল পাথর, আফগানিস্তান থেকে লাপিসলাজুলি, আরব থেকে কার্নেলিয়ান পাথর আমদানি করা হয়েছিল এই স্থাপত্য নির্মাণের জন্য।
![]() |
তাজমহল |
✦ স্থাপত্য: লালকেল্লা
প্রতিষ্ঠাতা: শাহজাহান
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: শাহজাহান যখন আগ্রা থেকে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন, তখন তিনি লালকেল্লা নির্মাণ শুরু করেন। এটি লাল বেলে পাথর দিয়ে নির্মিত। শাহজাহান এই স্থাপত্য নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারতীয় নির্মাণশৈলীর সাথে পারসিক প্রাসাদ স্থাপত্যের সংমিশন ঘটিয়েছিল।
দিল্লির লালকেল্লায় অবস্থিত দেওয়ান-ই-আম স্থাপত্যটি মূলত লাল বেলে পাথর দ্বারা নির্মিত। এর পূর্ব দিকের দেওয়ালের কেন্দ্রে মার্বেলের সামিয়ানা এবং সোনা ও রুপা দ্বারা নির্মিত গরাদ ছিল। এর অপরদিকে শাসক ও অপরদিকে জনগণ থাকত। এই প্রথা 'ঝারোখা দর্শন' নামে পরিচিত।
দিল্লির লালকেল্লায় অবস্থিত দেওয়ান-ই-খাস শাসক রাজসভাসদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন ও প্রধান অতিথিদের আপ্যায়ন করার উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়।
![]() |
লালকেল্লা |
✦ স্থাপত্য: জামা মসজিদ
প্রতিষ্ঠাতা: শাহজাহান
স্থান: দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: শাহজাহানের আমলে দিল্লিতে ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই মসজিদ নির্মিত হয়। ভারতের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ মসজিদ। এটি প্রধানত লাল বেলে পাথর ও সাদা মার্বেল পাথর দ্বারা প্রস্তুত।
![]() |
জামা মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: মোতি মসজিদ
প্রতিষ্ঠাতা: ঔরঙ্গজেব
স্থান: রেডফোর্ট, দিল্লি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: মোতি মসজিদ লালকেল্লা দুর্গের অভ্যন্তরে অবস্থিত।
![]() |
মোতি মসজিদ |
✦ স্থাপত্য: বিবি কা মকবরা
প্রতিষ্ঠাতা: ঔরঙ্গজেব
স্থান: ঔরঙ্গাবাদ
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: ঔরঙ্গজেব তার পত্নী রাবিয়া-উদ-সুরারির স্মৃতির উদ্দেশ্যে তাজমহলের অনুকরণে বিবি কা মকবরা স্থাপত্যটি নির্মাণ করেন। এটি দক্ষিণি 'তাজ' নামেও পরিচিত।
![]() |
বিবি কা মকবরা |
এগুলি ভারতের ঐতিহ্য এবং গৌরবের অংশ। প্রতিটি স্থাপত্য দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।
Please do not enter any spam link in the comment box.